প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা এবং মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষাদানের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
মূলনীতি
প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রম পাঁচটি সুর্নিদিষ্ট মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত যা নিম্নরূপ:
ক। উপযোগী পরিবেশে জাতীয় শিক্ষা বোর্ড ও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদ প্রণীত পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষাদান করা।
খ। পাঠ্য সহায়ক ও পাঠ্যক্রম বহির্ভূত সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করা।
গ। নৈতিক, সামাজিক, শারীরিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।
ঘ। শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ সচেতন, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করা।
ঙ। সৃজনশীলতাচর্চার মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রগতিশীল ও আধুনিক ধ্যান-ধারণাসমৃদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
বিশ্বসত্ত্বার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের জীবনকে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা প্রয়োজন। তবে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছুতে চাই আধুনিক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগোপযোগী শিক্ষা। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজ্ঞানভিত্তিক গুণগত মানের শিক্ষা ব্যবস্থায় আগামী প্রজন্মকে শিক্ষিত করে তোলার কোন বিকল্প নেই। সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) বাস্তবায়নে সরকারও বিভিন্ন উন্নয়ন পদক্ষেপের মধ্যে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসারে বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠিত ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ সমূহের ফলাফলও সন্তোষজনক। তারই ধারাবাহিকতায় এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে একটি আধুনিক শিক্ষানিকেতন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠা করে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। ‘এসো শিখি ও দেশ গড়ি’ এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে নার্সারি (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) থেকে অষ্টম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যদিয়ে জানুয়ারি ২০১৩ ইংরেজি থেকে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। শিক্ষা কার্যক্রমের শুরুতে প্রতিষ্ঠান উচ্চশিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও যোগ্যতা-সম্পন্ন অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ দেয়।
হালিশহর সেনানিবাসের পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে সেনানিবাসের নিজস্ব জায়গায় হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অবস্থান। নগরীর কোলাহলমুক্ত, শান্ত-শ্যামল-সবুজে সুশোভিত মনোরম পরিবেশের মাঝে এ প্রতিষ্ঠানের নান্দনিক অবকাঠামো, সমৃদ্ধ বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার ও বিভিন্ন সহপাঠ উপকরণসহ শিক্ষার আধুনিক ও অনুকূল বৈশিষ্ট্যমন্ডিত ক্যাম্পাস ছাত্র-ছাত্রীদের মানসগঠনে সহায়ক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়ম-শৃঙ্খলা অনুশীলন ও খেলাধুলাসহ অন্যান্য সহপাঠ কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা কম নয়। তাই এ প্রতিষ্ঠান শিক্ষা-সহায়ক অন্যান্য কার্যক্রমকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের সুপ্তপ্রতিভা বিকাশে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খেলাধুলা ছাড়াও নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি বির্তক, সঙ্গীত, আবৃত্তি, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, গণিত অলিম্পিয়াড, ভাষা প্রতিযোগ, দেয়াল পত্রিকা ও সাময়িকী প্রকাশসহ বিভিন্ন সহপাঠ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এছাড়া বিএনসিসি, স্কাউট, গার্লস গাইডসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য হয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও চরিত্র গঠনের পাশাপাশি দেশ ও মানবসেবায় আত্মনিয়োগের সুযোগ পায়। বিদ্যালয় তার ছাত্র-ছাত্রীদের আন্ত:স্কুল, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের ব্যবস্থা করে একটি মননশীল জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের শ্রেণিতে উপস্থিতি নিশ্চিতকরণসহ ব্যক্তিগত পাঠোন্নয়নে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করে থাকেন।
একজন মা যেমন তাঁর সন্তানকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যান তেমনি একটি ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার শিক্ষার্থীদের সুনাগরিকরূপে গড়ে তুলতে নিরন্তন দায়িত্ব পালন করে চলে। সুশৃঙ্খল, সুশিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক একটি জাতি গঠনের লক্ষ্যে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের যাত্রা শুরু করেছে। দায়িত্বশীল ও নিবেদিতপ্রাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে একটি প্রতিশ্রুতিশীল জাতি গড়ে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য। এর জন্য চাই সব মহলের অকৃতপন সহযোগিতা।